গ্যাস সংযোগের অনুমোদন পাওয়ার দীর্ঘদিন পরও বিতরণ বা সার্ভিস লাইন নির্মাণ না করার বিষয়টি উদ্বেগজনক। এর ফলে কেবল শিল্পকারখানার মালিক ও উদ্যোক্তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন না, একইসঙ্গে সরকারও বিপুল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে।
জানা গেছে, সরকার ২০১৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে দেশের ২২০টি কোম্পানিতে গ্যাস সংযোগের অনুমোদন দেয়। এর আগে আরও সাড়ে ৫শ’র মতো শিল্পপ্রতিষ্ঠানে গ্যাস সংযোগের অনুমোদন দেয়া হলেও বিতরণ লাইনের অভাবে ওই দুই তালিকার অধিকাংশ শিল্পপ্রতিষ্ঠানে গ্যাস সংযোগ দেয়া সম্ভব হয়নি।
এরই মধ্যে এলএনজি আমদানি সামনে রেখে আরও ২ হাজারের বেশি শিল্পকারখানাকে গ্যাস সংযোগের অনুমোদন দেয়া হয়েছে, যাদের অধিকাংশেরই বিতরণ লাইন নেই। দীর্ঘ ২০ মাস অতিবাহিত হলেও সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান কেন বিতরণ লাইন নির্মাণ করেনি কিংবা শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো নিজস্ব অর্থায়নে বিতরণ লাইন নির্মাণের অনুমতি চাইলেও অনুমোদন কেন দেয়া হয়নি- এ প্রশ্নের জবাব কী?
দুঃখজনক হল, বিতরণ লাইন না থাকায় একদিকে অনুমোদন পেয়েও সংশ্লিষ্ট গ্রাহকরা গ্যাস পাচ্ছেন না, অন্যদিকে সরকার উচ্চমূল্যের এলএনজি (তরল প্রাকৃতিক গ্যাস) আমদানি করে তা বিক্রি করতে পারছে না এবং এর ফলে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ গচ্চা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, এলএনজিবাহী প্রথম জাহাজ দেশে পৌঁছার পর গত রোববার ১ লাখ ৩৮ হাজার ঘনমিটার এলএনজি নিয়ে দ্বিতীয় জাহাজটি মহেশখালীর মাতারবাড়ি টার্মিনালে ভিড়েছে। সব ধরনের প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও মাঠপর্যায়ে পর্যাপ্ত পাইপলাইন, সঞ্চালনলাইন ও অবকাঠামো না থাকায় এলএনজি সরবরাহ করা যাচ্ছে না।
এর ফলে শত শত কোটি টাকার গ্যাস নষ্ট হচ্ছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, অনুমোদনপ্রাপ্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানের আঙিনা পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ লাইন নির্মাণ অথবা শিল্পকারখানাগুলোর নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণের অনুমতি দিলে এলএনজি সরবরাহ নিয়ে এমন বিপাকে পড়তে হতো না। আমরা মনে করি, এজন্য সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত।
চট্টগ্রাম খবর/কে.বি.আর