একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মৌলিক বিষয়গুলোতে একমত হলেও গণফোরাম, যুক্তফ্রন্ট ও বিএনপির বৃহত্তর ঐক্য এগিয়েও এগোচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে জামায়াতকে বাধা মনে করা হচ্ছে। তবে বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা এখনো বৃহত্তর ঐক্যের আশা ছাড়েননি। শেষ পর্যন্ত যদি বড় ঐক্য গড়া সম্ভব না হয়, তাহলে যাদের পাশে পাওয়া যাবে, তাদের সঙ্গে নিয়েই এগোবে বিএনপি।
দলটির নেতারা বলছেন, চলতি সেপ্টেম্বর মাসের শেষ নাগাদ সব দলকে নিয়ে সরকারবিরোধী একটি বড় ঐক্য দৃশ্যমান হবে। তাতে গণফোরাম, যুক্তফ্রন্টসহ বাম প্রগতিশীল ধারার বেশ কিছু দল সম্পৃক্ত হবে। এ লক্ষ্যে বিএনপির পাশাপাশি নাগরিক সমাজের কয়েকজন প্রতিনিধির একটা প্রচেষ্টা আছে।
বিএনপির দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, লন্ডনপ্রবাসী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পরামর্শে গত সপ্তাহে ভাইস চেয়ারম্যান পদমর্যাদার একজন নেতা যুক্তফ্রন্ট, গণফোরাম ও আটদলীয় বাম গণতান্ত্রিক জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলাদা কথা বলেন। এর বাইরে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আবদুল কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গেও ওই নেতার কথা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এর মধ্যে কয়েকজন নেতা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে যুগপৎ আন্দোলনে নামতে একমত হয়েছেন। আর যুক্তফ্রন্টসহ ওই কেন্দ্রিক দু-তিনজন নেতার কথায় বিএনপির ওই নেতা পুরোপুরি আশ্বস্ত হতে পারেননি। তিনি বিষয়টি দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে অবহিত করেছেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে একজন নেতা খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে দলে তারেক রহমানের নেতৃত্ব নিয়ে প্রতিবেশী একটি দেশের অসন্তুষ্টি রয়েছে বলে জানান। আরেকজন নেতা আন্দোলনের পর সরকারে গেলে এর পরিচালনা-কাঠামো কেমন হবে, সে বিষয়ে আগাম সমঝোতার অভিপ্রায় তুলে ধরেন।
বিএনপি সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে হলেও বৃহত্তর ঐক্য গড়তে চায়। দলটির উচ্চপর্যায়ের সূত্র বলছে, ঐক্য গড়তে বিএনপির তরফ থেকে রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন আনা, সুশাসন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপি কী করবে, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার করতেও প্রস্তুত। ঐক্য হলে গণফোরাম ও যুক্তফ্রন্টকে আলোচনা সাপেক্ষে নির্দিষ্টসংখ্যক আসন ছেড়ে দেওয়ারও চিন্তা আছে বিএনপির।
বিশিষ্ট আইনজীবী ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন অনেক দিন ধরে জাতীয় ঐক্যের কথা বলে আসছিলেন। এর মধ্যে বিকল্পধারা, জেএসডি ও নাগরিক ঐক্য মিলে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়। এই ফ্রন্টের বড় নেতা সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। সম্প্রতি যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে ড. কামাল হোসেনের গণফোরামের রাজনৈতিক সমঝোতা হয়েছে। তাঁরা ঐক্যবদ্ধভাবে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের আন্দোলন করবেন। যুক্তফ্রন্ট, গণফোরামসহ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের বাইরে থাকা দলগুলোকে নিয়ে অনেক দিন ধরে একটি বৃহত্তর ঐক্য গড়ার চেষ্টা করছে বিএনপি। কিন্তু ঐক্য-প্রক্রিয়া অনেক দূর এগিয়েও থমকে আছে।
চট্টগ্রাম খবর/কে.বি.আর