সাধারণত ঢেঁকিতে প্রায় ৭২ ইঞ্চি লম্বা এবং ছয় ইঞ্চি ব্যাসবিশিষ্ট একটি কাঠের ধড় থাকে। মেঝে থেকে প্রায় ১৮ ইঞ্চি উচ্চতায় ধড় ও দুটি খুঁটির ভিতর দিয়ে একটি ছোট হুড়কা বা বল্টু ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এ হুড়কার উপরেই ধড়টি ওঠানামা করে।
ধড়ের এক মাথার নিচের দিকে সিলিন্ডার আকারের প্রায় ১৮ ইঞ্চি দীর্ঘ এবং ছয় ইঞ্চি ব্যাসবিশিষ্ট এক টুকরো কাঠ যুক্ত করে দেওয়া হয়। এ কাষ্ঠখণ্ডের নিম্নপ্রান্ত একটি লোহার বলয় দিয়ে পরিবৃত করা হয় এবং এটি মুষলের কাজ করে। ধড় এটিকে উপরে তোলে, নিজের ওজনে এটি নিচে পতিত হয়। হুড়কা তার শক্তি বৃদ্ধি করে। আর মাথার নিচে একটি গর্ত করা হয়। এই গর্তকে গড় বলা হয়। সেখানেই ধান, চাল বা গম রাখা হয়।
ধান, চাল বা গম দিয়ে ঢেঁকির মাথার দিকে থাকে এক জন এবং পিছনের দিকে থেকে দুই জন। দুই জনের দুই পা দিয়ে ঢেঁকির পেছনে দিকে ভর দিলে ঢেঁকি মাথা উপরের দিকে থাকে। আর যখন ভর ছেড়ে দেওয়া হয় তখন মুষলটি গড়ের মধ্য গিয়ে পড়ে। আর মাথার দিকে থাকা একজন গড়ের মধ্যে থাকা ধান বা চাল নাড়তে থাকে। এ ভাবে কয়েক বার নাড়ার পর ধান থেকে তুষ আলাদা হয়ে যায় বা চাল থেকে আটা বেরিয়ে আসে।
এ ঢেঁকির সাথে নতুন প্রজন্মের অনেকেই অপরিচিত। এই ঢেঁকি ছিল অনেকের জীবিকা নির্বাহের অন্যতম উপায়।
ধুনট উপজেলার মধুপুর গ্রামের রেজিয়া বেগম বলেন, “আগে ১০ কেজি চাল গুঁড়া করে দিলে তিন কেজি চাল পাওয়া যেত। কিন্তু প্রযুক্তি এসে তা উঠে গেছে।”
যায়েদা বেগম বলেন, শীত কাল এলেই ঢেঁকিতে চাল গুঁড়া করে পিঠা বানানোর ধুম লেগে যেত। এখন এসব আর হয় না। মেশিনেই চাল গুঁড়া করা হয়।