মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় এ বছরের প্রতিযোগী ছিলেন বাংলাদেশের জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী। প্রতিযোগিতায় সেরা ত্রিশে ছিলেন তিনি। মিস ওয়ার্ল্ডের মুকুট জিততে না পারলেও বিনয় ও নম্রতায় আয়োজকদের মন জয় করে ফিরেছেন তিনি। পাশাপাশি নিজের ভেতরে লুকিয়ে রেখেছেন একটি গভীর আফসোস।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ঐশী এসেছিলেন প্রথম আলো কার্যালয়ে। আড্ডার ফাঁকে তিনি জানালেন নিজের সেই আফসোসের কথা। সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় করা কোন ভুলটির জন্য অনুশোচনা হয় তাঁর? তিনি বলেন, ‘এ প্রতিযোগিতার জন্য একটি ভিডিও তৈরি করে নিয়ে যেতে হয়। “বিউটি উইথ আ পারপাস” বিষয়বস্তুর ওপর নির্মিত ভিডিওটি সবার সামনে বড় পর্দায় দেখানো হয়। সেখানে নিজের সৌন্দর্য এবং কীভাবে তা সমাজের উন্নয়নে ব্যবহার করবেন, সেটাই উপস্থাপন করতে হয়। অসুস্থ ছিলাম বলে ভিডিওটি তৈরি করে নিয়ে যেতে পারিনি।’
ঐশী জানান, ভিডিওটি নিয়ে যেতে পারলে প্রতিযোগিতায় আরও এগিয়ে যেতে পারতেন তিনি। বলেন, ‘আয়োজকদের কাছ থেকে পরে জেনেছি, ভিডিওটি নিতে পারলে বেশ কিছু নম্বর পেতাম। তাতে হয়তো আর একটু এগিয়ে যেতে পারতাম।’
চীনের সানাইয়া শহরে বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতার ৬৮তম আসরে ১৫০টি দেশের প্রতিযোগীর সঙ্গে সেরার লড়াইয়ে অংশ নেওয়া ঐশী মন কেড়ে নিয়েছেন আয়োজকদের। ইংরেজি ভাষায় তাঁর যোগাযোগ দক্ষতা চমৎকার। ফলে বাংলাদেশ সম্পর্কে ইতিবাচক সব তথ্য তিনি তুলে ধরেছেন আয়োজকদের সামনে। জানিয়েছেন বিশ্বের দীর্ঘ সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারটি তাঁর দেশেই। এমনকি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার, একমাত্র ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন ও দেশের নারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথা। এ ছাড়া নাচের জন্য প্রতিযোগিতার দুই কোরিওগ্রাফারের কাছ থেকে দারুণ প্রশংসাও পেয়েছেন তিনি। ঐশী বলেন, ‘আয়োজকেরা আমাকে পরের অনুষ্ঠানেও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।’
নতুন বছরে ঐশীর পরিকল্পনা কী? তিনি জানান, বিশেষ শিশুদের জন্য কাজ করতে চান তিনি। সে জন্য একটি ফাউন্ডেশন গড়ে তোলার উদ্যোগ নেবেন। পাশাপাশি বিনোদন অঙ্গনে নিয়মিত কাজ করতে চান। এ ছাড়া পরেরবার বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ থেকে যিনি যাবেন, তাঁকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে চান ঐশী। তিনি বলেন, ‘আমার এখন অনেক আফসোস হচ্ছে। আগামী বছর যে যাবে, তার যেন একই আফসোস না হয়, সে জন্য আমি যা যা শিখেছি, সব তাকে শিখিয়ে দেব।’
বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের অনুমোদিত আয়োজক অন্তর শোবিজ। দুই বছর ধরে তারা বাংলাদেশে আয়োজন করছে ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতা। মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ প্রতিযোগিতার বিজয়ীরাই পরে যোগ দেন মূল ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ প্রতিযোগিতায়। বাংলাদেশ থেকে প্রথম আসরের বিজয়ী হয়েছিলেন জেসিয়া ইসলাম। গত বছর জেসিয়া ইসলাম জায়গা করে নেন সেরা চল্লিশে। এরপর হেড টু হেড চ্যালেঞ্জ পর্ব থেকে বিদায় নেন তিনি। এ বছর সবাইকে চমকে দিয়ে ঐশী জায়গা করে নেন সেরা ত্রিশে, ঠাঁই করে নেন ‘গ্র্যান্ড ফিনালে’ পর্বে। বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতার আয়োজকেরা মনে করেন, ঐশীর গ্র্যান্ড ফিনালেতে পৌঁছানো বাংলাদেশের জন্য একটি ইতিহাস।