বিগত ৩০ শে আগস্ট রবিবার রাতে একনারী রাজধানীর উত্তরখান থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (১) ধারায় মামলা দায়ের করেন। উত্তরখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ হেলাল উদ্দিন জানিয়েছেন, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিবার ধর্ষণ করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর একবছর আগে ঢাকায় বসবাসরত ওই নারীর সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর নামের চট্টগ্রামের একজনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর সূত্র ধরে ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর দেখা করেন তারা। তাকে ঢাকার উত্তরখান থানা এলাকার একটি রিসোর্টে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ তুলেন। এরপর থেকে তাকে বারবার বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন এবং আরও কয়েকবার শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করেন।
সেই অভিযোগের সূত্রধরে জানা যায়, অভিযোগকারী নারী রাজধানীর কথিত এক ফ্যাশন ডিজাইনার এবং ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দেয়া রুবানা আনোয়ার ইতিপূর্বে একাধিক পুরুষ ঘটিত ঘটনায় জড়িয়ে ছিলেন। এসব ক্যালেংকারীর কারনে এক কন্যা সন্তানের জননী রুবানার সংসার ভাঙ্গে। এসবের পরে আরো বেপরোয়া জীবনে জড়িয়ে পড়ে রুবানা৷ বিবাহ বিচ্ছেদের পর একাধিক পুরুষের সাথে সম্পর্কে জড়ানোর তথ্য মিলেছে৷ তবে কারো সাথেই সম্পর্ক স্থায়ী হয়নি বরং অভিযোগ আছে সমাজের প্রতিষ্ঠিত সেই মানুষ গুলোর কাছ থেকে রিলেশন ব্রেকাপের ক্ষতিপূরন বাবদ মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন রুবানা৷ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে রুবানা আনোয়ার নামে ডজন খানেক ফেসবুক আইডি খুলে নিত্য নতুন সম্পর্কে জড়ান রুবানা৷
একাধিক ফেসবুক আইডি আর সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করে সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত ধনী পরিবারের ছেলের সাথে গড়ে তুলে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক৷ তেমনি এক বন্ধুত্বের সূত্রে সম্পর্ক তৈরী হয় চট্টগ্রামের এক ব্যবসায়ীর সাথে৷ রুবানা বসবাস করে ঢাকার বসুন্ধরায় আর ব্যবসায়ী চট্টগ্রামে৷ মাঝে মধ্যেই ভাবের আদান প্রদান চলতো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে৷
তবে বরাবরের মতন এবার উচ্চাবিলাসী রুবানা আনোয়ার চট্টগ্রামের সেই ব্যবসায়ীর গলায় ঝুলে পড়তে চাইলে সেই ব্যবসায়ী তা বুঝতে পারে। ফলে বন্ধ করেদেন সকল যোগাযোগ। হাতের কাছে সুযোগ হাতছাড়া হচ্ছে দেখে এক পর্যায়ে প্রকাশ্য ব্লেক মেইলের হুমকি দিতে থাকে ব্যবসায়ীকে৷ এতেও কাজ না হওয়ায় ব্যবসায়ীর সামাজিক মর্যাদা হরনের করতে চট্টগ্রামের সেই ব্যবসায়ীর পৈত্রিক বাড়িতে গিয়ে শোরগোল সৃষ্টি করে৷ তবে রুবানার মিথ্যে কথায় কাজ হয় না৷
এপর মূলত রুবানা পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে সেই ব্যবসায়ীর বাসার সামনে কয়েকদিন অবস্থান করে। এতেও কাজ না হওয়ায় আত্মহত্যার হুমকি দিয়ে অপ্রিতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করলে স্থানীয় কোতোয়ালী থানায় গিয়ে রুবানা সেই তরুণ শিল্পপতির বিরুদ্ধে ধর্ষনের অভিযোগ তুলেন৷ তবে ঘটনাস্থল ঢাকার উত্তরখান থানায় এলাকায় হওয়ায় সেখানে মামলা গৃহীত হয়নি৷
অবশেষে রুবানা আনোয়ার বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে চট্টগ্রাম ভিত্তিক খ্যাতনামা শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজেরও পরিচালকের বিরুদ্ধে ধর্ষন মামলা দায়ের করে৷ ।
তবে রুবানার সর্বশেষ আপডেট যুক্ত ফেসবুক আইডি পর্যালোচনা করে দেখা যায় তিনি চলতি আগস্ট মাসের ২৩ তারিখে ফেসবুকে নিজের সম্পর্কের বিষয়টি প্রথম প্রকাশ করেন৷ সেখানে তিনি ২২ আগস্ট ২০২০ এ ইন এ রিলেশম শিপ উল্লেখ করেন৷ এরপর থেকে সেই ফেসবুক ওয়ালে চট্টগ্রামের সেই শিল্পপতিকে জড়িয়ে নানান স্টাটাস চ্যাটের স্ক্রিনশট পোস্ট করা আরম্ভ করে৷ সংগত কারনে প্রশ্ন উঠেছে ২০১৯ সাল থেকে সম্পর্ক শুরু হলে মাত্র ক’দিন আগে কেন জানানো হলো৷
এছাড়া তিনি একজন শিক্ষিতা এবং আত্মনির্ভর নারী হিসেবে নিজেকে দাবী করেন৷ সে বিবেচনায় তার মতন স্বনির্ভর নারী একজন ধর্ষককে বিয়ের জন্য উল্টো চাপ দেয়া কতোটা যুক্তিসংগত। রুবানা একজন ডিভোর্সী নারী অন্যদিকে সেই ব্যবসায়ীর স্ত্রী সন্তান রয়েছে জেনেও কিভাবে একজন বিবাহিত মানুষের সংসারে অনুপ্রবেশের চেষ্ট করছে সেটাও সচেতন মহল প্রশ্ন তুলেছে৷
এছাড়া রুবানার ফেসবুকে ব্যবসায়ীর সাথে যে সকল চ্যাটের স্ক্রিন শট দেয়া আছে সেখানে কোন প্রকার অশ্লিল শব্দ বা ইংগিত দেখা যায়নি৷ বরং সেই ব্যবসায়ী রুবানাকে নামাজ পড়ার অনুরোধ করতে দেখা যায়৷ একজন ধর্ষক না খারাপ চরিত্রের মানুষ কি সব সময় নামাজ পড়ার পরামর্শ দিতে পারে?